ষাটের দশকের শুরুতে গোটা অসমে ভাষা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল। একদিকে যখন দাবি ছিল কেবল অসমিয়াকে রাজ্যভাষা করতে হবে, অন্যদিকে তখন বাংলাকেও সহযোগী রাজ্যভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেবার দাবিতে সমগ্র অবিভাজিত অসমে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। মেঘালয়, মিজোরাম ইত্যাদি রাজ্য তখনই অসম থেকে বেরিয়ে যাবার দাবি জানাতে শুরু করেছিল। ১৯৬১র ১৯শে মে তারিখে শান্তিপূর্ণ সত্যাগ্রহীদের উপর গুলি চালিয়ে পুলিশ দীর্ঘদিনের জন্যে রাজ্যের বহুভাষিক চরিত্রে, চেহারাতে রক্তাক্ত দাগ এঁকে দেয়। এখনো যা শুকোয় নি। এখনো ওই ঘটনার সরকারি পর্যায়ে যে তদন্ত কমিশন বসানো হয়েছিল তার কোনো প্রতিবেদন বেরোয়নি, কোনো অপরাধী শাস্তি পায় নি। কেবল অবিভক্ত কাছাড় জেলাতে সরকারী ভাষা হিসেবে বাংলার স্বীকৃতি, গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে বাংলা পড়ানো শুরু করা, উচ্চমাধ্যমিক অব্দি স্কুলে বাংলাকে সহযোগী মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তখনকার মতো আন্দোলনকে স্তিমিত করেছিল সরকার। ১৯শে মের দিন কতক পরেই ৩১ মে থেকে ৩রা জুন সুপ্রিম কোর্টের বারিষ্টার এন সি চ্যাটার্জীর নেতৃত্বে এক বেসরকারী কমিশন সমগ্র বরাকউপত্যকা ভ্রমণ করে এক তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছিলেন। কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাইকোর্টের অধিবক্তা অজিত কুমার দত্ত,সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাইকোর্টের অধিবক্তা রণদেব চৌধুরী,সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাইকোর্টের অধিবক্তা এস কে আচার্য্য, এবং সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাইকোর্টের অধিবক্তা ও পশ্চিম বাংলার বিধায়ক সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়, পরে যিনি সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
সম্প্রতি শিলচরে সেই প্রতিবেদন গ্রন্থাকারে প্রকাশ পায়। ইংরেজিতে লেখা। কিন্তু যেহেতু পূর্বত্তোরের এক প্রধান রাজ্য, অসমের বাংলা ভাষা এবং বাঙালির পরিচিতির লড়াইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এই বই, আমরা এখানে তুলে দিলাম। ধন্যবাদ, ভাষা শহীদ স্টেশন দাবি সমিতির সম্পাদক ডাঃ রাজীব করকে যিনি বইটি পাঠিয়ে আমাদের সাহায্য করেছেন। ভাষা আন্দোলনের বিস্তৃত ইতিহাস না হলেও এক সংক্ষিপ্ত প্রেক্ষাপটের সঙ্গে পরিচইয় করিয়ে দেবে বইটি, আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। ডাঃ রাজিব করের সঙ্গে আলাপ করতে মেইল করতে পারেন ঃdrrajibkar@gmail.com